আকাশবার্তা ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়েও বাংলাদেশের দুশ্চিন্তার কিছু নেই বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক শুধু একটি দলের ওপর নির্ভর করে না; বাণিজ্যিক, কৌশলগত, ভূরাজনৈতিকসহ নানা বিষয় এখানে রয়েছে। তবে কূটনীতিকদের মতে, সরকার যে সংস্কারের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তাতে মার্কিন সহায়তার যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে, তার ওপরে প্রভাব পড়ার শঙ্কা রয়েছে।
বুধবার (৬ নভেম্বর) মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন উপলক্ষে দূতাবাসের আয়োজনে ঢাকার আমেরিকান সেন্টারে আয়োজিত নির্বাচন পর্যবেক্ষণের বিশেষ আয়োজনে বাংলাদেশের তরুণ নেতা, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের সদস্যরা অংশ নেন। এতে বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা নিয়ে শ্বেতপত্র তৈরির দায়িত্ব পাওয়া কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বর্তমান বিশ্বে যে জটিল পরিস্থিতি রয়েছে, তাতে যুক্তরাষ্ট্রের ফলাফল আরো সুদূরপ্রসারী প্রভাব রাখবে।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা (হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান) নির্যাতিত হচ্ছেন বলে মার্কিন নির্বাচনের আগে একটি টুইট করেছেন ট্রাম্প। মূলত ভারতীয়দের ভোট পাওয়ার জন্য এটি করেছেন তিনি। আমার মনে হয় না এটার কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বাংলাদেশে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে, ট্রাম্প ক্ষমতায় গেলে দলটির সুদিন ফিরবে। ওই দিন দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান তাদের সভাপতি শেখ হাসিনা। পরে এক ভিডিও বার্তায় ‘চট করে’ বাংলাদেশে ঢুকে পড়ার হুমকি দেন তিনি। ট্রাম্পের জয়ের পর অফিস-আদালত থেকে শুরু করে চায়ের দোকানে আলোচনার অন্যতম বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এটি।
পরিপ্রেক্ষিতে কূটনৈতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি কোনো একক ব্যক্তির ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে না। একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য সামনে রেখে খুঁটিনাটি আলোচনার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে পরিকল্পনা করে নীতি তৈরি করে দেশটি।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কূটনীতিক বলেন, ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ার কারণে অবৈধ অভিবাসীরা বিপাকে পড়তে পারেন। কিছু ক্ষেত্রে সেখানে অবৈধভাবে থাকা বাংলাদেশিরা আক্রান্ত হবেন। এছাড়া রোহিঙ্গাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে বাংলাদেশে অর্থায়ন আক্রান্ত হতে পারে। জাতিসংঘে বাজেটে প্রভাব পড়তে পারে। ফলে শান্তিরক্ষীদের বেতন প্রভাবিত হবে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, জঙ্গিবাদ দমন, মানবাধিকার ও গণতন্ত্র, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে অর্থায়নের মতো বিষয়গুলোতে প্রভাব পড়ার শঙ্কা রয়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার যে সংস্কারের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তাতে মার্কিন সহায়তার যেসব প্রতিশ্রুতি রয়েছে, তার ওপরেও প্রভাব পড়তে পারে।