আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
নলাকার স্টিল এবং কাঁচের টাওয়ারগুলোর মাধ্যমে তৈরি হয়েছে চারতলা বিশিষ্ট স্পেসপোর্টটি। এটি টোকিও সাগরে ভাসমান অবস্থায় গড়ে তোলো হয়েছে। ব্যাকগ্রাউন্ডে দেখা যাচ্ছে জাপানের আকাশচুম্বী সব ভবন। এখান থেকে পর্যটকদের মহাকাশ ভ্রমণে ভিন্ন অভিজ্ঞতা এনে দিতেই মূলত স্পেসপোর্টটি ডিজাইন করা হয়েছে। যে ভ্রমণ থেকে দেখা যাবে উঁচু উঁচু সব ভবনের ছাঁদ। আরো দেখা যাবে পৃথিবীর বক্রতা এবং অনুভব করা যাবে শূণ্য মধ্যাকর্ষণ শক্তি।
এই ধারণার প্রবর্তক নয়িজ আর্কিটেক্ট, ডিজাইনার ক্যানেরিয়া এবং জাপান স্পেসপোর্ট আশা করছে, আগামী বছরগুলোয় স্পেসপোর্টের আরো নতুন ধরণ দেখতে পাবে বিশ্ব।
টোকিওতে গড়ে ওঠা স্পেসপোর্টে আছে গবেষণা ও শিক্ষা একাডেমি, দোকান, সিনেমা, মুভি থিয়েটার , যাদুঘর, জিম, রেস্টুরেন্ট, একুরিয়াম এবং ডিস্কো বার। স্পেসপোর্টকে সাধারণের প্রবেশযোগ্য করতে নইজ আর্কিটেক্ট এটির অভ্যন্তরীণ পরিবহন ব্যবস্থাপনাকে ইলেকট্রিক কার এবং স্বতন্ত্র ট্রেনের মাধ্যমে একটি নেটওয়ার্কের আওতায় এনেছেন। যেটি মূল শহরের সাথে ভাসমান এ দ্বীপটিকে একীভূত করেছে। নির্মাতারা বলছেন, এখানকার প্রযুক্তিগত সম্ভাবনা এবং বিস্ময়কর ব্যাপারগুলোর মাধ্যমে মানুষকে অর্থনৈতিকভাবে আরো আগ্রহী হবে।
প্রচলিত মহাকাশযান মূলত উলম্ব বা খাড়া রকেট। তবে টোকিও স্পেসআউটের মহাকাশযান অনেকটা বিমানের মতো যেটি অনুভূমিক বা সরল রেখা বরাবর অতিক্রম করবে।
বাণিজ্যিক অনুভূমিক বা সোজাভাবে চলা মহাকাশযান এখনো সহজলভ্য নয়। তবে মহাকাশ পর্যটনের জন্য এটিই ব্যবহার করা হবে। পরীক্ষামূলকভাবে উড্ডয়নকৃত এ মহাকাশযানে উড়তে এরই মধ্যে ৬০০ জন রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছেন। প্রতিটি সিটের জন্য মহাকাশ পর্যটকদের গুনতে হবে ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার। আর ভ্রমণের ব্যাপ্তি হবে ৯০ মিনিট। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, আগামী বছরের শুরুতে এ যান চালু করা যাবে।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, এ মহাকাশযান পৃথিবীর ৮০ কিলোমিটার উপর দিয়ে উড়বে। কিছুক্ষণের জন্য পর্যটকরা শূণ্য মধ্যাকর্ষণ শক্তির অভিজ্ঞতা অর্জন করবে। যাত্রা শুরুর আগে মহাকাশ পর্যটকরা তিনদিনের প্রশিক্ষণ নেবে। নয়িজ আর্কিটেক্ট বলছে, মহাকাশে পর্যটকদের এ ভ্রমণ মানসিক ও শারীরিকভাবে চ্যালেঞ্জের বিষয়। তাই স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং প্রশিক্ষণ তাদের উড্ডয়ন পূববর্তী রুটিন কাজ হিসেবে গণ্য হবে।
জাপানের স্পেসপোর্ট সিটি পর্যটকদের জন্য প্রথম মহাকাশযান প্রকল্প নয়। যুক্তরাষ্ট্রের চতুর্থ জনবহুল শহরে হোস্টনের কাছাকাছি অবস্থিত স্পেসপোর্ট থেকে পর্যটকদের জন্য বাণিজ্যিক মহাকাশযান পরিচালিত হয়।
তবে টোকিও স্পেসপোর্ট জাপানের নাগরিকদের জন্য আলাদা সুবিধা এনে দিয়েছে। জাপান স্পেসপোর্টের পরিচালক হিদেতাকা আওকি জানান, টোকিও স্টেসপোর্টের মহাকাশযানে মাত্র এক ঘণ্টায় হংকং থেকে লসএঞ্জেলেসের মতো দূরত্বে পৌঁছানো সম্ভব।