আকাশবার্তা ডেস্ক :
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে ভাঙচুরের পর তালা মেরে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে ইউনিয়ন পরিষদে আসা সেবা প্রত্যাশীরা। সোমবার সকাল ১১টার দিকে সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে তালা দেওয়া হয়।
জানা যায়, প্রতিদিনের মতো সকালে ইউপি কার্যালয়ে এসে প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু করেন চেয়ারম্যান নুরুল আমিন। এসময় চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকদলের সদস্য সচিব জাবেদ হোসেন ও যুগ্ম আহ্বায়ক মনির হোসেন টিপুর নেতৃত্বে কয়েক যুবক এসে চেয়ারম্যানকে তাঁর অফিস থেকে বের করে দেয়। তারা কার্যালয়ে তালা মেরে দেয় এবং পরবর্তীতে চেয়ারম্যানকে অফিসে না আসতে হুমকি-ধামকি দিয়ে চলে যায়। এর আগে তারা বিভিন্ন সরকারি সেবা প্রদান সম্বলিত ব্যানার ভেঙে ফেলে।
স্থানীয় সেবা প্রত্যাশী আইনুল বলেন, ‘চেয়ারম্যান একজন ভালো মানুষ। তিনি ভিন্ন দল করলেও কখনো কাউকে কোনো কাজে হয়রানি করেননি। সাধারণ মানুষের যাতে স্বাক্ষর পেতে সমস্যা না হয় সেজন্য সারাদিন অফিসে বসে থাকেন। তিনি না থাকায় আমাদের অনেক অসুবিধা হচ্ছে।’
একই অভিযোগ করে আরও কয়েকজন সেবা গ্রহীতা। তাদের অভিযোগ, এইভাবে চেয়ারম্যানকে লাঞ্ছিত করা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। কার্যালয়ে তালা মারার কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। দ্রুত কার্যালয়ের তালা খুলে দেওয়ার দাবি জানায় সেবা নিতে আসা মানুষ।
ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সকাল বেলা চেয়ারম্যান সাহেব আসার পর কয়েকজন লোক এসে চেয়ারম্যান সাহেবকে অফিস থেকে বের করে দেয়। পরবর্তীতে তারা অফিসে একটি তালা মেরে দেয়। সরকারি অফিসে এভাবে তালা মারার নজির আগে ছিলনা। এরআগে কয়েকজন এসে সরকারি বিভিন্ন সেবা প্রদর্শনীর ব্যানার ভেঙে ফেলে। সকাল থেকে বিভিন্ন মানুষ অফিসে চেয়ারম্যান সাহেবের স্বাক্ষরের জন্য এসে ফেরত চলে যায়।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন জানায়, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকদলের সদস্য সচিব জাবেদ হোসেন এবং যুগ্ম আহ্বায়ক মনির হোসেন টিপুসহ কয়েকজন এসে চেয়ারম্যানের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে এবং তাঁকে অফিস থেকে বের করে দিয়ে অফিসের দরজার তালার উপর আরেকটি তালা লাগিয়ে দেয়। এতে সাধারণ সেবা প্রার্থীরা চরম ভোগান্তির শিকার হয়।
তবে অভিযুক্ত জাবেদ হোসেন বলেন, ‘আমজনতা ইউপি কার্যালয়ে তালা দিয়েছে। আমরা কেউ তালা দেইনি। এটার সঙ্গে আমাদের কোনো সর্ম্পক নেই।’
চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কায়সার হামিদের কাছে জানতে চাইলে বলেন, ‘আমি এখনো এ বিষয়ে কোনো তথ্য পাইনি। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জামশেদ আলম রানা বলেন, ‘কী কারণে বা কারা ইউপি কার্যালয়ে তালা মেরেছে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’