আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
চলতি বছরের রমজানের শেষ দিকে এসে ফিলিস্তিনিদের ওপর ফের বর্বর হামলা শুরু করে মধ্যপ্রাচ্যের বিষফোঁড়া খ্যাত ইসরায়েল। ফিলিস্তিনিরাও তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী প্রতিবাদ শুরু করে। এরপরই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। এখনও সেই সংঘর্ষ চলছে। গত সাত বছরের মধ্যে এটাই সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষ।
১০ মে থেকে টানা এ হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা বেড়ে ২১২ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন ১ হাজার ৫০০ জন ফিলিস্তিনি। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৬১টি শিশু ও ৩৬ জন নারী রয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে অনেকেই জানার চেষ্টা করছেন ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল- কার সামরিক শক্তি কত?
পরমাণু অস্ত্রসমৃদ্ধ বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক সেনাবাহিনীর একটি রয়েছে ইসরায়েলের। অন্যদিকে ফিলিস্তিনিদের নিজস্ব কোনও রাষ্ট্র কিংবা নিয়মিত সেনাবাহিনী নেই। এমনকি দখলদারদের প্রতিরোধ করে নিজেদের আত্মরক্ষার মতো যথেষ্ট সামারিক সক্ষমতাও নেই তাদের। তাই যদি ইসরায়েল-ফিলিস্তানের মধ্যে পুরোদমে যুদ্ধ বেধে যায়, তবে তা একপাক্ষিক হবে। সামরিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সক্ষমতায় ইসরায়েল ফিলিস্তানের থেকে অনেক অনেক বেশি এগিয়ে।
এর নেপথ্যে রয়েছে ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্রের বিপুল সামরিক সহায়তা প্রদান। মার্কিন প্রশাসন মনে করে, মধ্যপ্রাচ্যে নিজের পরোক্ষ আধিপত্য ধরে রাখতে ইসরায়েলকে ক্রমাগত শক্তিশালী করতে হবে। এছাড়া পশ্চিমা দেশগুলোও রয়েছে ইসরায়েলের পক্ষে। ফলে বৈধ ভূমি থাকার পরও ফিলিস্তিন আজও রাষ্ট্র হিসেবে জাতিসংঘের স্বীকৃতি পায়নি। অন্যদিকে অবৈধভাবে আরবদের ভূমি দখল করে ইসরায়েল পেয়েছে জাতিসংঘের মর্যাদা।
চলুন, দেখে নেয়া যাক ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে কার সামরিক শক্তি কত?
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী
সক্রিয় সেনা সদস্য: ১ লাখ ৭০ হাজার।
প্রশিক্ষিত জনসংখ্যা: ৩০ লাখ।
সেনাবাহিনীর বাজেট: ২০ বিলিয়ন ডলার।
ফিলিস্তিনের সামরিক বাহিনী
নিয়মিত কোনও সেনাবাহিনী নেই। বিভিন্ন গ্রুপ মিলে ৩০ থেকে ৫০ হাজার সদস্য রয়েছে। এর মধ্যে হামাসের রয়েছে ১০-২০ হাজার। কাসেম ব্রিগেডের ৭-১০ হাজার সদস্য রয়েছে। এছাড়া ফিলিস্তিন ইসলামি জিহাদের ৯-১০ হাজার।
ইসরায়েলের অস্ত্র
অস্ত্রের নিজস্ব কারখানা রয়েছে। বিদেশেও রপ্তানি করে। ৯০টি গোপন পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। যুদ্ধবিমান ৬৮৪টি। বিমান বাহিনী ৩৪ হাজার, নৌবাহিনী ১০ হাজার, যুদ্ধজাহাজ ৪টি। ক্ষেপণাস্ত্রবাহী বোট ৮টি। সাবমেরিন ৫টি। প্যাট্রোল বোট ৪৫টি। সাপোর্ট শিপ ২টি।
অত্যাধুনিক ব্যালেস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে ইসরায়েলের, যা পাশের দেশ মিসর, সিরিয়া ও ইরানে হামলা করতে সক্ষম। এছাড়া ১ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার কিলোমিটার দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রোড ডোম। রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে অস্ত্র রপ্তানি করে ইসরায়েল।
হামাসের অস্ত্র
১০০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার রেঞ্জের কয়েক ডজন রকেট রয়েছে। ৭০-৮০ কিলোমিটার রেঞ্জের আরও কিছু রকেট রয়েছে। নতুন উদ্ভাবিত একটি রকেটের পাল্লা আড়াইশ কিলোমিটার বলে জানিয়েছে হামাস।
ইসলামিক জিহাদ
১০০ কিলোমিটার রেঞ্জের কয়েকটি রকেট রয়েছে।