শনিবার ১৮ই মে, ২০২৪ ইং ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর

হাসান আরিফ :


শহুরে মানুষের হাতে সময় কম। দিন থেকে রাত ব্যস্ততার মধ্যে যেখানে দম ফেলার মুহূর্তগুলোও ঠিকমতো পাওয়া যায় না, সেখানে কোথাও ঘুরে বেড়ানোর সময় বের করা এক ধরনের বিলাসিতাই বটে কিছু কিছু মানুষের জন্য। তাই ভ্রমণবিলাসী এক বিশাল মন থাকা সত্ত্বেও কোথাও বেড়িয়ে আসা হয় না। কক্সবাজারের সমুদ্রের গান শোনা আর বান্দরবানের কোনো পাহাড়ে উঠে মেঘ দেখার ইচ্ছাগুলোও তাই থেকে যাচ্ছে অপূর্ণ। কিন্তু ঘুরে বেড়ানোর মন আর দৃষ্টি থাকলে কম সময়ে এবং কম টাকায় চাইলে যে ঘুরে আসা যায় তার উধারণ আমরা। কমন ছুটিতে অফিসের অনেকে মিলেই একদিনে ঘুরে এলাম চাঁদপুর থেকে।

চাঁদপুর তিন নদীর মোহনা
চাঁদপুর যখন যাবোই, তাহলে সেটি লঞ্চেই যাবো বলেই সিদ্ধান্ত হয়। আসলে এই ভ্রমণের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশটি হচ্ছে এর যাত্রাপথ। দক্ষিণাঞ্চলের কিছু জেলার মানুষ ছাড়া শহরের খুব বেশি মানুষের নদীপথে চলাচলের তেমন অভিজ্ঞতা নেই। আর বিভিন্ন সময়ের লঞ্চডুবির কিছু ঘটনা এবং ঈদের আগের খবরে সদরঘাটে মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখে লঞ্চ যাত্রার ব্যাপারে ধারণাটাও একটু নেতিবাচক হয়ে গেছে। তাই পারলে সদরঘাটে গা ভেড়ানোর কথা কেউ চিন্তাও করে না। তবে সদরঘাটে এখন এমন কিছু লঞ্চ রয়েছে, যেগুলোর আধুনিকতা আর বিলাসিতা দেখে চোখ কপাল ছুঁয়ে যাবে এবং সেগুলোতে চলাচল করাও বেশ নিরাপদ। তবে লঞ্চে ওঠার আগে শুধু একটু খোঁজ-খবর নিতে হবে চাঁদপুরে যাওয়ার জন্য অনেক লঞ্চ আছে।

আমরা রাত ১২টায় কর্মব্যস্ত ঢাকাকে পেছনে ফেলে পানি কেটে তরতর করে এগিয়ে চললো লঞ্চ। আমাদের লঞ্চ যাত্রা শুরু বুড়িগঙ্গা নদী থেকে। আস্তে আস্তে ধলেশ্বরী আর শীতলক্ষ্যা পাশ কাটিয়ে লঞ্চ গিয়ে উঠে মেঘনায়। সবচেয়ে মুগ্ধ করবে যে ব্যাপারটা তা হলো, প্রতিটি নদীরই নিজ নিজ আলাদা রূপ আছে। কেবিনে কাঁথা মুড়ি দিয়ে না ঘুমিয়ে তাই উঠে যেতে হবে ছাদে। চাঁদপুর পথের চারটি ঘণ্টা অসাধারণ কাটবে নদী, পানি, নৌকা, দূরের জনপদ আর জেলেদের মাছ ধরা দেখে। তবে আমরা ছাদে উঠার আগে রাতের খাবার খেতেই বেশি ব্যস্ত। কারণ তখন রাত প্রায় সাড়ে ১২টা। লঞ্চে উঠার আগেই তৌহিদুল ইসলাম পাভেল পুরান ঢাকার তেহারি নিয়ে এসেছিল। তবে সুমন আহমেদ সানির উপদ্রোপ ছিল সব খানে। এই ছেলেটা সুযোগ পেলেই ছবি তোলছে। এমন কি খাওয়ার সময়ও।

ব্যাঙার চর
মেঘনার বাতি জ্বালিয়ে ছোট ছোট জেলে নৌকা নদীর ঢেউয়ে দুলুদুলু দুলছে, মনে হচ্ছে এই তো বুঝি উল্টে গেল, কেউ বা ধরেছে জাল টেনে, শক্ত হাতে হাল টেনে ধরেছে তাঁর সঙ্গী, কেউ বা নৌকায় বসে গুনে নিচ্ছে ধরা পড়া মাছের সংখ্যা। তবে যাওয়ার সময় তার সবটাই দেখতে হয়েছে লঞ্চের লোয়। শহুরে জীবনের মায়া কাটিয়ে কোনো জেলে নৌকায় উঠতে মন চাইছিল। আমরা রাতের খাবার খেখয়ে প্রায় সবাই লঞ্চের ছাদে গানের আসর বসাই। আমাদের দলের যারা একটু অলস তারা কেবিনেই থেকে যায়। গানের আসর জমজমাট হলে আশপাশের অনেকেই আমাদের সাথে যোগ দেন। তবে মেজবাহ উদ্দিনের এক বন্ধু যার নাম সাকিব আর বাকি বিল্লাহ, যাকে আমি বাকি নামেই ডাকি। তারা দুজনই মুলত গায়ক। আমরা শুধু তালমিলিয়ে চলেছিলাম তা না, তাল মিলানোর সাথে সাথে কণ্ঠও মিলানো হয়েছে। দীর্ঘ সময় গান আর নির্মল বাতাসে শরীর মন জুড়িয়ে আমরা আসি আমাদের কেবিনে। কেবিনের ব্যবস্থা আগেই করে রেখেছিলেন নাইমুর রহমান ফিরোজ। ভাগ্য ভাল কি খারাপ তা জানি না। রাত সাড়ে তিনটায় আমাদের লঞ্চ চাঁদপুরে বন্দরে ভিরে। তাই আমরা সিদ্ধন্ত নেই, ভোর না হওয়া পর্যন্ত লঞ্চেই অবস্থান করবো। তবে দূরন্ত মন, তাকি আর মানে ঘন্টাখানেক অবস্থান করার পর ভোর না হতেই আমরা লঞ্চ থেকে নেমে যাই। লঞ্চ টার্মিনালে আলো আধারির মধ্যেই চলে ছবি তোলাতুলি। এর পর লঞ্চ টার্মিনাল থেকে বের হয়ে চলে চা চক্র। ভোরের শিশিরের সাথে চা, সে এক অন্যরকম অনুভূতি।

এবার বড় স্টেশন। হাসানুজ্জামান বলেন, এখানে না দাঁড়িয়ে থেকে আমরা চাঁদপুরের মূল আকর্ষণে যাই। জায়গাটা বেশি দুরেও না। আমি তাকে পূর্ণ সমর্থন দেই। অন্যরা হলে হলো না হলে নাই, ভাব। এরকারণ অপরিচিত জায়গা। তারপরও ফজরের আযানের সময় আমার বেটারি চালিত অটো রিকসায় জেএম সেনগুপ্ত রোড, চাঁদপুর শিল্পকলা একাডেমি পেরিয়ে বড় স্টেশনের পথে। বিশ মিনিটে আমরা পৌঁছে যাই। পুরাতন রেলওয়ে স্টেশনটিই বড় স্টেশন নামে খ্যাত। আস্তানা হিসাবেও এর সুখ্যাতি ছিল। কথিত আছে এক সময় এখানে ভান্ডারী গানের আসর বসতো। সেই থেকে এর নাম হয়ে যায় আস্তানা। এখানেই রয়েছে ইলিশের বাড়ি চাঁদপুরের প্রতিক বিশাল এক ইলিশের ভাস্কর্য। রিকসা থেকে নেমেই চলে ছবি তোলাতুলি। কিছুটা সামনে যেতেই চোখে পড়ে ‘রক্তধারা’ নামে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ এখানে জ্বলজ্বল করছে। রক্তধারা স্মৃতিস্তম্ভটি খুব সুন্দর। গায়ে লেখা ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’। এখানেও কি ছবি তোলা বাদ দেওয়া যায়।

এবার আমরা মোহনার দিকে এগিয়ে যাই, যেটার জন্য ভ্রমণ পিপাসুরা চাঁদপুর আসেন। এখানে নদী বাঁধ দিয়ে আটকানো। প্রতিদিন বাঁধের উপর হাজার হাজার মানুষ বেড়াতে যায়। ভীড় করা মানুষ আড্ডা-গল্পে মশগুল হয়। মোহনাটির বননা দিতে গেলে বলতে হয়, লম্বা এক চিলতে জমি। যার তিন দিকে তিন নদী, একদিকে পদ্মা, একদিকে মেঘনা আর অপর আরেক দিকে ডাকাতিয়া। তবে এর সৌন্দর্য্য বননা করে বুঝানো যাবে না। এখানের সৌন্দর্য চোখে না দেখলে উপলব্ধি করার মতো না। তিন নদীর মোহনাখ্যাত এই এলাকাতেই লঞ্চ দুর্ঘটনা বেশি হয়। ঢাকা থেকে আসার আগেই সৈয়দ রেফাত সিদ্দিকী ইলিশ খাওয়ার জন্য প্রায় পাগল হয়ে ছিলেন। তাই মাছ খাওয়ার তর সইছিলা না তার। সকালেই ঘাট থেকে ইলিশ কেনার ব্যবস্থা করে গিয়াস উদ্দিন। গিয়াস এই এলাকারই ছেলে ও জামাই।

ফলে তার সবই চিনা। মাছ কেনার আগেই আমরা বিশ্রামের জন্য উঠি রেল ওয়ের বাংলোতে। এরই মধ্যে ইলিশ কেনা হলে সেলফি তোলে ইউসুফ উদ্দিন রনি ফেসবুকে দিয়ে দেয়। ঘন্টা দুই বিশ্রামের পর ইলিশ ভাজা আর পান্তা আ..হা কি যে মজা। সাথে ভাজা মরিচ আর আলু ভর্তা। খাওয়ার সময়ই আমাদের সিদ্ধান্ত হয় আরমা কোন চরে গিয়ে ফুটবল খেলবো আর নদীতে হবে গোসল। যে ভাবনা সেই কাজ। তবে বেকে বসেন বিশ জনের এই দলে বিশজনের চরে যাওয়া হয় না। নাজমুল হাসানসহ অনেকেই নদীর ঢেউ দেখে না যাওয়ার সিদ্ধন্ত নেয়। তারা রেস্টহাউজেই অবস্থান করবে বলে জানিয়ে দেয়। তাই বলে বসে থাকলে চলবে না। টলার ভাড়া করে আমরা পদ্মা-মেঘনা পাড়ি দিতে প্রস্তুত। হাবিবুর রহমান (মহব্বত) প্রথমে যেতে চায় না। পরে সে যেতে রাজি হয়। পেয়ারে মহব্বত শুধু যায়ইনি চরে ভাল ফুটবলও খেলেছে।

আমরা যারা উত্তাল ঢেউ ভেঙ্গে পদ্মা-মেঘনা পাড়ি দিয়ে লগ্নি মারার চরে যেতে প্রস্তুত তারা সবাই টলারে উঠে নিজ নিজ পজিশন নেই। তবে আমি কারে নাম বলতে চাই না। যারা টলারে উঠার আগে বলেছেন, যার যেখান মৃত্যু সে সেখানেই মরবে। অতএব ভয়ের কি আছে। যারা এসব কথা বলেছেন, তারাই দেখলাম লাইফ টলারে উঠেই লাইফ জ্যাকেট পরছে। যাই হউক নিরাপত্তার মধ্যে থাকা ভাল। আমিসহ কয়েক জনে তার ধারে কাছেও যাইনি। টলার চলতে শুরু করলে, একেক জন বিরকে দেখলাম ভয়ে গুটিশুটি হয়ে বসে আছে। তবে টলারের অগ্রভাগেও আমরা দুজন বসেছিলাম। তবে লাইফ জ্যাকেট ছাড়াই। মিনিট কয়েক যেতেই দেখি আমাদের আব্দুর রহিম টলারের পাটাতনে লম্বা হয়ে শুয়ে পরেছে। এ নিয়ে কারো কোন আগ্রহ আছে বলেই মনে হলো না। তবে চলতি টলারে নদীর পানি ধরার অনুভূতি দু’একজন হাতছাড়া করতে চায়নি। আমি এই কাজটা সব সময়ই করতে ভালবাসি। ফারুক আলমকেউ দেখলাম ভয়ে ভারে এই আনন্দো নিতে। পুরো শরীর টলারের ভিতর রেখে, মাথাটা ঝুকিয়ে ও পানি ধরার চেষ্টা করছে। সফলও হয়েছে।

আকাশে প্রচন্ড রোদ, নিচে অথৈই পানি। টলার চলার সময় মনে হচ্ছে আমরা কোন মরুদ্যান দিয়ে যাচ্ছি। তবে ঢেউয়ের তোরে যখন টলার শূণ্যে উঠে আবার নিচে পড়ছে তখন একেক জনের চেহারা দেখে বুঝা যাচ্ছে আমরা প্রমত্তা নদীর বুক চিড়ে যাচ্ছি। অনেক দূর থেকেই লগ্নির চল দেখা যায়। এখানে বসতি আছে। তবে চরটা শুরু হয়েছে এক অদ্ভূত ভাবে। আমার কাছে মনে হয়েছে চরের শুরুটা হয়েছে সূয়ের মত সরু হয়ে। এরপর প্রসস্ত হয়েছে। কিন্তু ভ্রমণকারি যারা যায় তারা এই চরের একটা মাঠে নামে। এরপর ইচ্ছা হলে চলে ঘুরাঘুরি। আমরা চরে নামতেই আশরাফুল ইসলাম আর এনায়েত উল্লাহ মাঠ দখল করতে ঝাপিয়ে পরে। কারণ আগে থেকেই কিছু লোক মাঠে ছিল। তারাও খেলতে আগ্রহী। ফলে তাদের একটাই লক্ষ্য মাঠ দখল করা। টলার থেকে নেমে যখন সবাই ফুটবল খেলার জন্য ব্যস্ত তখন আমি আর আরিফুর রহমান চলে যাই চরে গহীনে। চরের ভীতরে গাছপালা আর বসতবাড়ীর কত যে ধ্বংসাবশেষ দেখেছি। দেখেছি চরের গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ার পড়ে থাকা চিহ্ন।

সবুজের সমারোহে মাঝে এ এক গভীর ক্ষত। এই চরে জনবসতি এক জায়গাতে বেশি দিন স্থির থাকতে পারে না তার অনেক প্রমানই আমরা দেখতে পেয়েছি। আমাদের চর দেখা আর সবার ফুটবল খেলা শেষ হতে না হতেই শুরু হয় বৃষ্টি। তাই খেলা বাদ দিয়ে সবাই টলারের পলিথিনের নিচে আশ্রয় নেই। তখনই মাথায় আসে বৃষ্টি আর নদীর স্রোত গোসল করার। যা ভাবনা তাই কাজ। সবাই মিলে নদীর জলে দে ঝাপ। ফেরার পথে ভিতুদের মধ্যেও কিছুটা সাহস লক্ষ্য করা গেছে। তবে এ সময় ঢেউগুলি আগের তুলনায় অনেক বড় বড় ছিল। তিন নদীর মোহনা হওয়ায় একেক সময় একেক দিকে স্রোত লক্ষ্য করা গেছে। তকে স্রোত বিপরিত দিকে ঢেউ সব সময়ই ছিল। আমাদের টলারের অনেকটা দুরে সাগরের ঢেইয়ের মতো ঢেউও আমরা দেখেছি। তবে সব থেকে বেশি অবাক হয়েছি নদীর একটা বিচিত্র ঘটনায়। তা হচ্ছে- পানির একটা জায়গাতে কোন ঢেউ নেই। ওই জায়গার পানি কুকুরের পানির মত নিরব। কিন্তু এই নিরব পানির চার দিকেই ঢেউ আর ঢেউ। ঢেউগুলি নিরব পানির কাছে এসেই থেমে যাচ্ছে। আমাদের টলারটা ওই নিরব পানির উপর দিয়েও এসেছে। আমরা মূল ভুমির কাছাকাছি আসার পর অনেকেরই সাহস আরো বেড়ে যায়। এসময় বাকি বিল্লাহ্ আবারো নদীতে সাতার কাটে। সাথে আরেকজনকে ছিল মনে নেই। যাই হউক দিনটা শুক্রবার হওয়ার অনেকেই নামাজ পড়তে যায়। এরপর শুরু হয় দুপুরের ইলিশ পোলাউ খাওয়া। তখন রুপালি ইলিশের স্বাদ নিতে সবাই ব্যস্ত। এসময় আমাদের সাথে যোগদেন স্থানীয় রেল ষ্ট্রেশনের কর্তার দুই ছেলে। তারাও আমাদের মতো ভ্রমণেই এসেছেন। দুপুরের খাবারের পর বাঙ্গালীর চাই বিশ্রাম।

বিকেলে গিয়েছিলাম দেশের সবচেয়ে বড় ইলিশ মাছের বাজারে। সেখানে সব থেকে বেশি আকর্ষণ ছিল আড়াই কেজি ওজনের ইলিশ। কেজি প্রতি দাম হাকা হচ্ছে ২৯০০ টাকা। এখানে ইলিশ আর ইলিশ। ইলিশের টলার থেকে কুলিরা সারা দিনই আড়তে আনছেন। আড়তের মাছের কথা কি বলবো! আহা মাছ দেখলেই চোখ চিকচিক করে। তাদের অনুমতি নিয়ে ইলিশের টলারেও ঘুরার সুযোগ পেয়েছি। যারা ইলিশ কেনার উদ্দেশ্যে আসবেন তারা অল্প ইলিশ কিনলে খুব একটা সুবিধা করতে পারবেন না। তবে দলগত ভাবে ঢাকে কিতনলে ভালই পত্তা পড়বে। চাইলে ওপারের পুরান বাজারেও ঘুরে আসা যায়। বাজারের বয়স দুইশ বছর। এত পুরাতন বাজারের নাম পুরান বাজার হওয়াই ঠিক আছে। অবশ্য বাজারের অর্ধেক নদী গর্ভে গেছে। আর গেছে একটি মসজিদ ও মন্দির। তবে এখানে গেলে চমৎকার কারুকার্যের লোকনাথ মন্দিরটি দেখা হয়ে যাবে।

পুরান বাজারে চমৎকার কারূকার্যের একতালা-দোতালা কিছু দোকান রয়েছে। দেওয়ান ব্রাদার্স ও শ্রী মথুরা মোহন পোদ্দার তাদের মধ্যে অন্যতম। শ্রী মথুরা মোহন পোদ্দার এখন টুকুন বাবুর হোটেল নামে খ্যাত। এখানের অন্যতম বিষয় হল বানর। প্রচুর বানরের বসবাস এখানে। বানরে ভরা এমন এলাকায় মানুষ-জন শুধু তাদের দেখতে এসে পুরান বাজারেও চোখ বুলিয়ে নেয়। এখানে আসার সময় সবাই সঙ্গে খাবার নিয়ে আসে। সে খাবার ছড়িয়ে দিলে ভীড় করে সব বানরের দল। একটু সময় হাতে থাকলে দেখা সম্ভব লোহাগড়ের মঠ। তবে সেটি দেখতে চাইলে চাঁদপুর ঘাটে না নেমে এর পরে ইচলিতে নামতে হবে। সেখানে নেমে সিএনজি ভাড়া করে লোহাগড়া মঠে যেতে হবে। যদি খুব ভোরে যাওয়া যায়, তাহলে অসাধারণ লাগবে। উঁচু তিনটি মঠের ওপরে রয়েছে পাখির বাসা। ভোরে এদের বাড়ি ছাড়ার দৃশ্য পরিবেশটিকে আরো অসাধারণ করে তোলে। পাশের জলাভূমিতেও দেখা যাবে নাম-না-জানা আরো অনেক পাখি। অসাধারণ সুন্দর জায়গাটিতে যা দেখা যাবে তা আসলে আসল মঠের ধ্বংসাবশেষ। এই মঠগুলো ঘিরে নানা ধরনের গল্পও প্রচলিত আছে। স্থানীয় কারো কাছ থেকে সে গল্প শুনতে শুনতে সেই সময়ে হারিয়ে যাওয়াও সম্ভব।

     এই বিভাগের আরও সংবাদ

আর্কাইভ

মে ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« এপ্রিল    
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১