রবিবার ১৯শে মে, ২০২৪ ইং ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হরতাল মুক্ত নতুন ধারার রাজনীতি

এ.কে.এম শামছুল হক রেনু  :


বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে ও পরে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিভিন্ন রাজনৈতিক ইস্যু ও জন দাবী দাওয়ার আলোকে হরতাল একটি রাজনৈতিক সংস্কৃতি হিসেবে আবির্ভূত হয়ে আসছে। এর মধ্যে আধাবেলা, ১ দিন থেকে শুরু করে ৪৮ ঘন্টা এবং লাগাতার ৭২ ঘন্টার হরতালও হয়েছে।

এবারই প্রথম বারের মতো দেখা যায় ০৮/০২/১৮ ইং জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৫ বছর কারাদন্ড, তারেক রহমানসহ অন্যান্যদের ১০ বছর কারাদন্ড হলেও এর প্রতিবাদে বিএনপি কোন হরতাল কর্মসূচী না দিয়ে ০৯/০২/১৮ ইং বিক্ষোভ, ১০/০২/১৮ ইং প্রতিবাদ কর্মসূচী, ১১/০২/১৮ ইং থেকে ১৫/০২/১৮ ইং পর্যন্ত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের বিক্ষোভ, ১২/০২/১৮ ইং মানববন্ধন, ১৩/০২/১৮ ইং গণ অবস্থান, ১৪/০২/১৮ সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ৮ ঘন্টার অনশন কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়েছে।

তাছাড়া অহিংস, শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কথা বলা হয়েছে। এটাকে দেশের মানুষ রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সুদূর প্রসারী চিন্তা ভাবনা এবং ইতিবাচক রাজনীতির দিকদর্শন বলে মনে করে থাকে। যদি হরতালমুক্ত রাজনীতির এ নতুন ধারা অব্যাহত থাকে, তবে এটা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনকে যেমনি বিকশিত করবে তেমনি গণতান্ত্রিক ধারাকেও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে অনেকেই গণমাধ্যমে মতামত ব্যক্ত করে থাকেন। দেশের মানুষ চায় স্বস্থি, শান্তি, আইনের শাসন, ও বিশৃংখলা মুক্ত সুন্দর রাজনৈতিক পরিবেশ। অর্থাৎ রাজনীতি যার তার, দেশ সবার এই প্রত্যয়কে সামনে এগিয়ে নিয়ে চলার মনমানসিকতা।

দীর্ঘদিন পরে হলেও হরতাল মুক্ত রাজনীতির এ নতুন ধারা এবং অহিংস, শান্তিপূর্ণ ও কাংখিত গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিটি চালু হয়েছে বলে, দেশের জনগণ ও সকল শ্রেণী পেশার মানুষ এটাকে সুনজরে দেখছে। অর্থাৎ হরতালে যাদের মায়ের বুক খালি হয়েছে, আহত ও পঙ্গু হয়েছে, স্বামী হারা স্ত্রী, ভাইহারা বোন ছাড়া হয়তো অনেককেই এই নিদারুন ব্যাথা, বেদনা, শূন্যতা ও মর্মস্পর্শী হৃদয় বিদারক আহাজারি যাতনাকে বুঝানো বাস্তবিকই কঠিন। তাই কবির কন্ঠে সুর মিলিয়ে বলতে হয় “কি যাতনা বিষে বুঝিবে সে কিশে কভু আশী বিষে দংশেনি যাবে”। দেশের আপামর জনগণের অসুবিধা বিবেচনায় ক্ষমতায় গিয়ে হরতাল সংস্কৃতি থেকে দূরে গিয়ে অনেকেই অন্য কর্মসূচীর কথা বললেও, বাস্তবে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, সরকারি দল থেকে বিরোধী দলে এসে কেহই এ হরতাল সংস্কৃতি থেকে বেড়িয়ে আসতে পারে না। তেমনিভাবে অহিংস, শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ধারে কাছেও আসতে পারে না।
দেশের মানুষের ধারণা ছিল ৮ ফেব্রুয়ারী যদি মাঠের বিরোধী দলীয় নেত্রীর কোন ধরণের সাজা হয়ে যায় তবে গতানুগতিক কারণেই হয়তোবা হরতাল কর্মসূচী আসতে পারে। কিন্তু গতানুগতিক রাজনীতির এ ধারা বিদ্যমান না হওয়াতে জনমনে হরতালমুক্ত নতুন ধারার যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি চালু হয়েছে যদি তা অব্যাহত থাকে, তবে দেশের মানুষ এটাকে আশার আলো ও নতুন ধারার রাজনৈতিক সংস্কৃতি হিসেবেই দেখছে।

হরতালের কারণে একদিকে যেমন জাতীয় অর্থনীতির উপর চরম চাপ সৃষ্টি হয় তেমনি মানুষের চলাফেরা, স্বাভাবিক জীবনযাত্রা, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও সকল শ্রেণীর শিক্ষা ব্যবস্থার উপর অচলাবস্থা, চাকরির ইন্টারভিউসহ সার্বিক ক্ষেত্রে ব্যাপক সমস্যা ও অসুবিধাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া বাস্তবিকই অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাছাড়া বাস, ট্রেনসহ অন্যান্য যাত্রী পরিবহনের দুর্বিসহ জ্বালা যন্ত্রণাকে কোনভাবেই অস্বীকার করার মতো সুযোগ না থাকারই কথা। এ প্রসঙ্গে ভোক্তভোগী হিসেবে এ নিবন্ধে মহা বেদনার একটি উদাহরণ তুলে না ধরলেই নয়। কোন এক দলের হরতালের সময় বাজিতপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এ্যাম্বুলেন্সে একজন মুমূর্ষ স্বজন রোগীকে ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়ার পথে বার বার হরতাল আহবানকারী দলের লোকজনের লাঠিপেটার ভয়ে এ্যাম্বুলেন্স তদারকির সম্মুখীন হয়ে ঢাকার হাসপাতালে পৌঁছাতে অতিরিক্ত কয়েক ঘন্টা বিলম্ব হওয়ার কারণে পথেই রোগীর জীবনাবসান হয়। এমনিভাবে নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষার হলে উপস্থিত না হওয়ার কারণে এবং যথাসময়ে চাকরির ইন্টারভিউয়ে যোগদান করতে না পারায় কত ছাত্র-ছাত্রী ও কত চাকরি প্রার্থীদের আশা ভরসা যে বিলীন হয়ে গেছে তার খবরই বা রাখে কজনা। হরতাল আহবান রাজনৈতিক সংস্কৃতি হয়ে আসলেও এ থেকে যদি সরে আসা যায় এবং মানুষের দুঃখ কষ্টের কথা চিন্তা করে যদি হরতাল বিহীন নতুন দিকদর্শন ও সংস্কৃতির উন্মেষ ঘটে, তাতে অমঙ্গলের চেয়ে কল্যাণেরই সুবাতাস নীহিত হওয়ারই কথা।

তাছাড়া আরেকটু লক্ষ্য করলে দেখা যায়, হরতার আহবানকারীরা একটা শ্রেণীকে মাঠে নামিয়ে পর্দার অন্তরালে থেকে অনুপ্রাণিত করলেও ঐদিন ওরা বাসাবাড়ী থেকে বের না হয়ে ভূনা খিচুড়ি মিডিয়ার পর্দা ও মোবাইল নিয়েই ব্যস্ত থাকে। অপরদিকে সরকারী দল ও শাসক গোষ্ঠি হরতাল বাঞ্চাল করার জন্য দলীয় লোকজন, পুলিশ, আমর্স পুলিশ, বিজিবি দিয়ে হরতাল প্রতিরোধের প্রচেষ্টা চালিয়ে থাকে। যে কারণে হরতালকারী ও হরতাল প্রতিহতকারীদের মধ্যে প্রায় সময়ই মারামারি, ধস্তাধস্তি, অনকাংখিত ঘটনাসহ আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে গন্ডগোলের প্রেক্ষাপটে কাঁদুনে গ্যাস, আহত, নিহত ও কারাগারে নেয়ার ঘটনারও কমতি লক্ষ্য করা যায়নি। তাছাড়া হরতালকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দলের লোকদের মধ্যে অনভিপ্রেত ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া, সংঘাত, সংঘর্ষ চলাকালে হরতালে শান্তি শৃংখলায় কর্তব্যরত পুলিশসহ অন্যান্য আইন শৃংখলা বাহিনীও তাতে জড়িয়ে পড়ে। তাতে সমাজে আইনশৃংখলা রক্ষা বাহিনীর ভাবমূর্তিও অনেকাংশে ক্ষুন্ন হয়ে থাকে। যদিও গণতন্ত্রে হরতাল প্রতিবাদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

পাকিস্তানের স্বৈরশাসক ও একনায়কের হাত থেকে পরিত্রাণের জন্য এদেশের নির্যাতিত মানুষ যেমনি রাজনৈতিক দলের ব্যানারে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ৫২, ৬২, ৬৯, ৭০ সালে আন্দোলন করেছে, তেমনিভাবে এদেশের সকল শ্রেণী পেশার মানুষ মুক্তির জন্য অসংখ্যবার বিক্ষোভ, প্রতিবাদ, মানববন্ধন, অবস্থান ও অনশন কর্মসূচীসহ হরতাল পালন করেছে।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ৪৭ বছরের মধ্যে অনেক সরকার এসেছে, অনেক সরকার বিদায় হয়েছে। তন্মধ্যে অনেকেই শান্তিপূর্ণভাবে বিদায় হয়েছে, আবার আন্দোলনের মধ্যেও পট পরিবর্তনের বিদায় নিতে হয়েছে। তন্মধ্যে দেশের রাজনৈতিক দল বিভিন্ন দাবী দাওয়ার আলোকে অসংখ্যবার হরতাল দিয়েছে। আওয়ামী লীগ বিরোধী দল থেকে যেমনি বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে বিএনপির বিরুদ্ধে হরতাল দিয়েছে তেমনি বিএনপিও বিরোধী দল থেকে বিভিন্ন ইস্যু ও দাবী দাওয়াকে উপলক্ষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধেও হরতাল ডেকেছে। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ সেনাশাসক এরশাদ ক্ষমতা হরণের পর আওয়ামী লীগ ১৯৮৬ সালের ৩য় সংসদে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করলেও বিএনপি ৮৬ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। এরশাদের ৮৮’র অনির্বাচিত পার্লামেন্ট থেকে শুরু করে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর এরশাদ ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর আগমুহুর্ত পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৫ দল, বিএনপির নেতৃত্বে ৭ দল ও ৫ দলীয় বাম মোর্চা এক কাতারে আন্দোলন ও হরতাল দিয়ে থাকে।

১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপি একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠিত করলে আওয়ামী লীগ যেমনি একটার পর একটা লাগাতার হরতালের কর্মসূচী দিয়েছে তেমনিভাবে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী আওয়ামী লীগের একতরফা নির্বাচনকালে বিএনপিও হরতালের কর্মসূচি দিয়েছে। মোদ্দা কথা পাকিস্তানীদের অতাচার, অবিচার, বিমাতাসুলভ আচরণ ও শোষন থেকে মুক্তির লক্ষ্যে হরতাল থেকে শুরু করে স্বাধীন বাংলাদেশের ৪৭ বছরে হরতাল কর্মসূচী কম হয়নি। তাছাড়া গ্যাস, বিদ্যুতের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদেও প্রায় সময়ই অর্ধদিবস ও ১ দিনের হরতাল কর্মসূচী কম দৃষ্টিগোচর হয়নি। তারপরও দেশে আঞ্চলিক সমস্যা নিরসন ও বর্তমান সরকারী দলে পাল্টাপাল্টি গ্রুপিং, লবিং ও তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনেক সময় দেশের কোন কোন এলাকা, জেলা, উপজেলাতে যেমনি হরতাল আহবান করা হয়ে থাকে তেমনি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে

বাস, ট্রাক ধর্মঘট থেকে শুরু করে কোন কোন এলাকায় ৬/৭ দিন পর্যন্ত একাধারে বাস, ট্রাক ও নৌ চলাচল বন্ধ রাখতে হরতালের মতো ধর্মঘট আহবানের চিত্র ও দৃশ্যপট হয়ে থাকে।

পরিবেশ পরিস্থিতি লক্ষ্য করলে দেখা যায়, আজ যেন তেন তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হরতাল নামক শব্দটিকে ব্যবহার করে জনমনে আতংক সৃষ্টি করা হয়ে থাকে। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ে হরতাল নামীয় উচ্চারণটি সেই জায়গায় না থেকে হরতাল এখন অনেকের উক্তিতে ভয়তাল, ভয়ভীতি, আতংক ও উচ্ছাসে পরিণত হয়েছে।

তাছাড়া জনমনে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ও সম্মতিতে হরতাল আহবানের রেওয়াজ থাকলেও হরতাল যেন আজ মামুলি ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিছু হলেই হরতাল দেয়াতে মানুষ আজ হরতালের মতো গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও অধিকার আদায়ের এ হাতিয়াটিকে আমল দিতে না চাইলেও জানমাল ও লাঠিপেটার ভয়ের কারণে এটাকে সহ্য করে নিলেও মন থেকে এ ধরণের হরতালকে মানুষ কোনক্রমেই মেনে নিতে চায় না। কথায় বলে কয়টা কিল ঘুষি সহ্য করতে পারবে উত্তরে বলা হয় একটাও না। আর যদি হাত পা বেঁধে কিল, ঘুষি দেয়া হয় তবে কঠা কিল ঘুষি সহ্য করতে পারবে, তখন বলা হয় যত খুশী তত এবং জীবনাবসান না হওয়া পর্যন্ত। তাই আজ যেনতেন কারণে হরতাল ও একই ধরণের অপঘাত বলে অনেকেই মনে করে থাকে।

হরতাল প্রসঙ্গে একজন বিদগ্ধ গুণীজন বলেছেন, বাইবেলে আছে, ঢ়যুংরপরধহ যবধষ ঃযুংবষভ অর্থাৎ চিকিৎসক আগে নিজের চিকিৎসা করে। হরতাল দিয়ে ঘরে বসে ঝালমুড়ি, ভূনা খিচুড়ি খাওয়ার সংস্কৃতি থেকে বেড়িয়ে এসে ডাক্তারের মতো নিজের ক্ষতি চিকিৎসাই প্রনিধান যোগ্য।

১১/০২/১৮ ইং রোবাবর দৈনিক যুগান্তরের প্রথম পাতাসহ অন্যান্য গণমাধ্যমে সচিত্র প্রতিবেদনে দেখা যায়, ১০/০২/১৮ ইং শনিবার বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবীতে বিক্ষোভ করার সময় ঢাকার বিজয় নগরে জনৈক বিএনপির কর্মীকে পাকড়াও করে পা দিয়ে চেপে ধরেছে পুলিশ। অন্য একটি পত্রিকায় দেখা যায় জনৈক বিএনপি কর্মীকে পেটাচ্ছে পুলিশ এবং সে মাটিতে পড়ে দুহাত দিয়ে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে। এ দৃশ্য দেখে অনেকেরই মন্তব্য এমন হওয়ার কথা নয়। এটা যেমন বেশী বাড়াবাড়ি তেমনি আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ারই শামীল। কারণ পুলিশ জনগণের বন্ধু এবং কমিউনিটি পুলিশের রূপকার রবার্ট ফিলের উক্তিতে অর্থাৎ পুলিশই জনতা এবং জনতাই পুলিশ। ০৮/০২/১৮ ইং বেগম খালেদা জিয়ার রায়কে কেন্দ্র করে অনেকেই হরতালের কথা চিন্তা করেই সন্তানদের ০৯/০২/১৮ ইং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না পাঠানো এবং গ্যারেজ থেকে গাড়ী বের না করার সিদ্ধান্ত নিলেও ০৮/০২/১৮ ইং মিডিয়াতে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের ঘোষণায় ৯ ও ১০ ফেব্রুয়ারী বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচী ঘোষণা করার ফলে জনমনে হরতালভীতি মুক্ত ও পরবর্তী সময় ১১, ১২, ১৩ ও ১৪ ফেব্রুয়ারীর কর্মসূচীতে হরতাল না থাকাতে যথেষ্ট স্বস্থি ফিরে আসে।

বর্তমানে এমনিতেই পেঁয়াজ, চাউলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের উর্ধ্বগতি। যা হরতালের কারণে আরো বেড়ে যাওয়ার কথা। তাছাড়া এস.এস.সি পরীক্ষার কথা চিন্তা করে এ মুহুর্তে হরতাল কর্মসূচী না দেয়া এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন জেলে থেকে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী ও আইনী লড়াইয়ের মাধ্যমে তাঁর মুক্তির ব্যাপারে দলকে যে নির্দেশনা দিয়েছেন তাতে দেশের সুশীল সমাজ থেকে সাধারণ মানুষ এটাকে ইতিবাচক ও প্রশংসনীয় দিক নির্দেশনা বলেই মনে করে থাকে। তদোপরি বিএনপি যদি এ ব্যাপারে গতানুগতিক পন্থায় হরতাল ঘোষণা করতো, তবে তা সহ্য করে নেয়া ছাড়া উপেক্ষা করার মতো তেমন কিছু ছিল না। তবে এ মুহুর্তে হরতাল ব্যতিরেখে বিএনপির বিক্ষোভ, প্রতিবাদ, মানববন্ধন, গণ অবস্থান ও অনশন কর্মসূচী নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের অংশ বিশেষ বলে অনেকেই মনে করে থাকে। এমনিভাবে মানুষের জীবন যাত্রাকে নিয়ে চিন্তা ভাবনা করে যদি সামনে এগিয়ে যাওয়া যায় তবে দেশে শান্তি স্বস্থির পথ যেমনি সুগম হবে তেমনি গণতান্ত্রিক রাজনীতির ধারা সামনে এগিয়ে যাবে। এ নিবন্ধে আগেই বলা হয়েছে রাজনীতি যার তার, দেশ সবার। অহিংস, শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক ধারায় আগামী দিনেও যাতে হরতাল মুক্ত নতুন ধারায় রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিকাশ ঘটে এবং বক্তৃতা, বিবৃতি ও আচরণে যাতে সরকারী দল ও বিরোধীদলসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মধ্যে সহিষ্ণুতা, উদারতা ও গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির উত্তরোত্তর উন্নতি হয় ইহাই জনপ্রত্যাশা।

— লেখক কলামিষ্ট

     এই বিভাগের আরও সংবাদ

আর্কাইভ

মে ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« এপ্রিল    
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১